সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

লালাখাল, স্বচ্ছ নীল পানির নদী সিলেট ভ্রমণ গাইড সম্পর্কে জানুন সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি যাওয়ার জন্য অনেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়েছেন কিন্তু সঠিক তথ্য পাননি  আমরা আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলে সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় ভ্রমণ জানতে পারবেন তাই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৮০০ ফুট উচ্চতায় এক প্রকৃতির ভূস্বর্গ এটি বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ইউনিয়নে বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র যা বাংলাদেশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান তো চলুন আর দেরি না করে সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যায় ।

পেজ সূচিপত্রঃ সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পড়ুন

• সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি
• সাজেক ভ্যালিতে যা দেখবেন
• সাজেক ভ্যালি ভ্রমণে উপযুক্ত সময় নির্ধারণ
• সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি যাওয়ার উপায়
• সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি থাকার ব্যবস্থা
• সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙামাটি খাবারের ব্যবস্থা
• সাজেক ভ্যালির ভ্রমণ খরচ
• সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের জন্য কিছু টিপস
• আমাদের শেষ কথা

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি এক বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বর্তমানে স্থান পেয়েছে সাজেক ভ্যালি ভূপৃষ্ঠ থেকে সর্বমোট ১৮০০ ফুট উচ্চতায় কোন এক প্রকৃতির উপসর্গ যা দেখার জন্য প্রতিনিয়ত হাজারো পর্যটক গন ভিড় জমাচ্ছে বর্তমানে রুইলুইপাড়া হামারি পাড়া এবং কংলাক পাহাড় নিয়ে তৈরি হয়েছে এই সাজেক ভ্যালি সমতা ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৭২০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত হওয়ায় রাঙ্গামাটির প্রায় এক তৃতীয় অংশ এখান থেকেই দেখা যায় এজন্য সাজেক ভ্যালিকে রাঙ্গামাটির ছাদ হিসেবে গণ্য করা হয়

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় বলার কারণ হচ্ছে এই পাহাড়ে সর্বদাই মেঘ জমে থাকে এখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত খুব সুন্দরভাবে দেখা যায় কংলাক পাহাড় রই লুই পাহাড় এবং হামারী পাহাড় এখান  থেকে ট্রেকিং শুরু হয় এখান থেকেই আপনাকে সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া কংলাক পাহাড়ে যেতে হবে যেটা হলো সর্বোচ্চ পাহাড় সাজেক ভ্যালি ।

আরো পড়ুনঃতাজিংডং বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে  জানুন

সাজেক ভ্যালিতে যা দেখবেন

সাজেক ভ্যালির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হল জিরো পয়েন্ট এখানে গেলে আপনি দেখতে পাবেন বাংলাদেশের বিডিআর অর্থাৎ বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড তারা অবিচল দেশ রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণভাবে কাজ করে যাচ্ছে আর সাজেক ভ্যালির সাথে মিশে আছে আদিবাসীদের জীবন মেঘের ঘন কুয়াশায় আদিবাসীদের জীবন ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান সবমিলিয়ে এ যেন এক মেঘের রাজকন্যা সাজেক ভ্যালি পাহাড়ের বুকে সবুজের সমরহ আর সকালের সূর্যমামার ওকি এবং দুপুরে হাতে ভেজা মেঘের শিশির আর সন্ধ্যাবেলার সূর্যাস্তের রক্তিম আবরণ সব মিলে এক আকর্ষণীয় অনুভূতি করে রেখেছে মহান সৃষ্টিকর্তা এই সাজেক ভ্যালিকে

সাজেক ভ্যালির সর্বোচ্চ চূড়া সংলাপ পাহাড় যেতে এবং আসতে মোট ৪ ঘন্টা সময় লাগবে আপনি এখানে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় না দেখলে বড় কোন একটা প্রকৃতির সৌন্দর্য মিস করে ফেলবেন

এছাড়াও এখানে রয়েছে সবচাইতে বড় ঝর্ণা হাজা ছাড়া তাছাড়াও সাজেক ভ্যালি হেলিপ্যাড কোন এক রাত কাটালে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে হাজারো রকমের পর্যটকের গান বাজনা বিভিন্ন রকমের আনন্দ উল্লাসে মেতে থাকে সন্ধ্যার পরে এই হেলিপ্যাড এখানে বিভিন্ন রকমের উপজাতীয় খাবার পাওয়া যায় যেমন কাঁকড়া ভাজা মোরগের রোস্ট বিভিন্ন রকমের ঝাল মুড়ি ইত্যাদি ।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণে উপযুক্ত সময় নির্ধারণ

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি যেতে হলে আপনাকে উপযুক্ত সময় নির্ধারণ করতে হবে কোন সময় তে গেলে আপনি সব রকমের সুবিধা এবং পাহাড়ের সৌন্দর্য লীলাভূমি দেখতে পাবেন এজন্য আপনাকে সর্বদা শীত মৌসুমের সাজেক ভ্যালির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় এ সময় যেতে হবে যারা ভ্রমণ পিপাসা আছেন তারা বর্ষা শুরু এবং শীতের শেষ পর্যন্ত ভ্রমণ করে থাকে তবে নভেম্বরের মধ্য সময়ে ভ্রমণ করা সবচাইতে ভালো এ সময় সারাদিন আকাশের বুকে মেঘ ভেসে ভেসে খেলা করে আপনি হাত নাড়ালে মেঘের ছোঁয়ায় আপনার হাত ভিজে যাবে তাইএ সময়ই হল সেরা সময় সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের জন্য

আরো পড়ুনঃকাঞ্চনজঙ্ঘা পঞ্চগড় থেকে দেখার উপায় ও ভ্রমণ গাইড

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি যাওয়ার উপায়

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাড়ার রাঙ্গামাটি যাওয়ার জন্য আপনাকে ঢাকায় আসতে হবে এখান থেকে বাসযোগে শান্তি পরিবহন সৌদিয়া পরিবহন শ্যামলী পরিবহন ঈগল হানিফ ডলফিন ইত্যাদি পরিবহনের মাধ্যমে সরাসরি খাগড়াছড়ি চলে আসতে পারেন এসি এবং নন এসি দুই রকমের বাস পাওয়া যায় এসি বাসের ভাড়া ৯৫০ থেকে ১২৫০ টাকা রাঙ্গামাটি এসে পৌঁছাবে নন এসির ভাড়া ৫২০ টাকা বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারে যদি একটু পরে সে ক্ষেত্রে বাসের টিকিট আগে কেটে নেওয়া ভালো ।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক ভ্যালি 

সাজেক ভ্যালি আসতে হলে প্রথমে আপনাকে রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি আসতে হবে এখান থেকে আপনাকে চাঁদের গাড়িতে করে সাজেক ভ্যালি যেতে হবে এটা আবার আলাদাভাবে ১০ জন কি বারো জনের চাঁদের গাড়ি ভাড়া করতে হবে এর মধ্যে পারমিট কাগজপত্র সঙ্গে আনতে হবে চাঁদের গাড়ির ভাড়া ১০ জনের জন্য ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং ১২ জনের জন্য আলাদা কোনো ভাড়া দেওয়ার প্রয়োজন হবে না

আর আপনি যদি কাউকে না পান সেক্ষেত্রে সিএনজি ভাড়া পাবেন সিএনজিতে গেলে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া লাগবে তবে সিএনজিতে না যাওয়াই ভালো এখানে সময়ও বেশি লাগবে এবং ঝুঁকিরও মুখোমুখি হতে পারেন ।

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি থাকার ব্যবস্থা

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড়ে থাকার জন্য আপনাকে একটি বাজেট হাতে রাখতে হবে এই কারণে যে এখানে থাকতে হলে বিভিন্ন ধরনের ঘরের বিভিন্ন রকমের ভাড়া বাঁশের তৈরি ঘরে থাকতে হলে আপনাকে কম ভাড়া দিতে হবে আর কাঠের তৈরি ঘরে থাকলে আপনাকে ভাড়া বেশি দিতে হবে পাহাড়ের উপরে যে বাঁশের তৈরি ঘরগুলো আছে সেগুলোর উপরে থেকে আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন মনে হবে যেন সমস্ত পাহাড়গুলো আপনার পায়ের নিচে আর আপনি যেন একমাত্র পাহাড়ের উপরে বসে থেকে কোন এক সৌন্দর্যের কবিতা মনে মনে লিখছেন এখানকার রিসোর্ট এর ভাড়া তুলনামূলকভাবে একটু বেশি হবে

নিচে সাজেক ভ্যালির রাতে যাপনের ভাড়ার তালিকা দুই রাত্রি যাপন ১০ হাজার ৫০০ টাকা

একরাত্রি যাপন ৭৭০০ টাকা

এখানে মোট ছোট-বড় সব মিলিয়ে একশটির মতো রিসোর্ট রয়েছে ৩০০ টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়ার হয়ে থাকে তবে ১৫ থেকে ২০ দিন আগের রুম বুকিং করে নেয়া রাখলে ভাড়া অনেকটাই কম হয়

রিসেটের জন্য যোগাযোগ রিসোর্ট রুংরাং মোবাইল নাম্বার ০১৮৬৯ ৬৪ ৯৮১৭/০১৬৩২ ৬৯৮১৫৮

সাজেক রিসোর্ট গুলো আর্মিদের দ্বারা পরিচালিত ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে ভাড়া লাগবে এসি এবং নন-এসি উভয় রুম বুকিং করতে পারেন

মোবাইল নাম্বার ০১৮৫৯ ০২৫৬৯৪/০১৮৪৭ ০৭০৩৯৫

আরো পড়ুনঃপুঠিয়ার রাজবাড়ী যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙামাটি খাবারের ব্যবস্থা

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটির খাবারের ব্যবস্থা জন্য আপনাকে কোন টেনশন করার প্রয়োজন নেই এখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার পাবেন যেটা অনেক মজাদার এবং সুস্বাদু তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার হল ব্যাম্বো চিকেন এতে কয়েকজনের জন্য রান্না করা যায় আবার দল বেধে যারা খাবেন তাদের অগ্রিম অর্ডার দিলে সবার জন্য রান্না করার সুব্যবস্থা রয়েছে এছাড়াও খাবারের জন্য পাহাড়ি বুন মোরগের রোস্ট পাওয়া যায় তাছাড়াও সাজেক ভ্যালির হেলিপ্যাড বিভিন্ন রকমের উপজাতীয় খাবার ব্যবস্থা করা থাকে সেটা সন্ধ্যার পরে পেয়ে যাবেন ।

সাজেক ভ্যালির ভ্রমণ খরচ

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি যাওয়ার জন্য আপনাকে অনেক টাকায় গুনতে হবে এক্ষেত্রে গ্রুপ ভাবে গেলে কম টাকায় হয়ে যাবে ৮ থেকে ১০ জনের গ্রুপ করতে হবে আর যদি আপনি একা ঘুরতে যান সে ক্ষেত্রে অনেকগুলো টাকা খরচ হয়ে যেতে পারে

প্রতি খরচ আসবে প্রতিবেলা খাবারের জন্য দেড়শ থেকে ২০০ টাকা বিভিন্ন এন্ট্রি ফি ও পার্কিংয়ের জন্য খরচ আসবে ১৫০ টাকা আর কটেজ ভাড়ার জন্য ৫০০ টাকা

একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বর্ষাকালে ভ্রমন করলে আপনার খরচ একেবারে তুলনামূলকভাবে কম হবে।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের জন্য কিছু টিপস

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙ্গামাটি ভবনের জন্য কিছু টিপস আপনাকে স্মরণ রাখতে হবে

এখানে শুধুমাত্র রবি এবং এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক পাবেন গ্রামীণফোনের কোন নেটওয়ার্ক থাকবে না

এখানে কোন বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই জেনারেটরের সাপ্লাইয়ের মাধ্যমে আপনাকে রাত্রি যাপন করতে হবে তাই পাওয়ার ব্যাংক সাথে রাখবেন

সাজেক ভ্যালি যাত্রার জন্য একেবারে ঠিক হবে না এটা আর্মির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা করা আছে

পাহাড়ি কালচার এর উপরে হাসি তামাশা করা যাবে না তাদের অনুমতি ছাড়াও কোন ছবি তোলা একেবারে ঠিক হবে না

সাজেক ভ্যালির মূল নীতি হলো যেখানে সেখানে কোন ময়লা আবার যেন করা যাবে না ।

আরো পড়ুনঃনারায়ণগঞ্জ জেলার শীর্ষ আটটি দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ গাইড সম্পর্কে জানুন 

আমাদের শেষ কথা

সাজেক ভ্যালি মেঘের পাহাড় রাঙামাটি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে আশা করি বুঝতে পেরেছেন এরপরও যদি কোন রকমের সমস্যা থেকে থাকে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন পুনরায় সঠিক তথ্য দিয়ে তা পূরণ করে দেয়া হবে

সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি যাওয়ার জন্য আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন সকলের কাছে আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিবেন যাতে করে তারা অপচয় সময়ে মন ফেস করার জন্য মেঘের কন্যা সাজেক ভ্যালি ট্যুরে যেতে পারে।